ইসলামী ব্যাংকের সেবা সমূহ। ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট করার পদ্ধতি ও বিস্তারিত।

আসসালামু আলাইকুম। ইসলামী ব্যাংকের সেবা সমূহ। ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট করার পদ্ধতি ও বিস্তারিত।  ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় একটি ব্যাংক। বাংলাদেশের টপ রেঙ্ক এর যতগুলো ব্যাংক রয়েছে তার মধ্যে এটি অন্যতম। প্রতিবছরের রেমিটেন্স সহ লেনদেন সহ বিভিন্ন দিক থেকে একটি অন্যান্য ব্যাংকের উপরে থাকে। আজকে আমরা ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড নিয়ে অনেকগুলো প্রশ্নের সমাধান জানবো। যেটা আপনাকে এই ব্যাংকের সবগুলো খুঁটিনাটি বিষয় জানতে সহায়তা করবে । আপনার পক্ষেও ডিসিশন নেওয়া সহজ হবে যে আপনি এই ব্যাংকে একাউন্ট করবেন কিনা।
ইসলামী ব্যাংকের সেবা সমূহ। ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট করার পদ্ধতি ও বিস্তারিত।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি তে কি কি ধরনের একাউন্ট করা যায়।

এখানে আপনি অনেক ধরনের অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন । সর্বপ্রথম আপনি সেভিং একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন । আপনি চাইলে এখানে ডিপিএস একাউন্টে তৈরি করতে পারবেন । আপনি চাইলে এখানে স্টুডেন্ট একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন । এছাড়াও এখানে আপনি হজ সেভিং একাউন্ট, মোহরানা সেভিং একাউন্ট, বিবাহ সঞ্চয়সহ বিভিন্ন ধরনের অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন । মুদারাবা মান্থলি প্রফিট এবং এককালীন জমা সহ বিভিন্ন ধরনের একাউন্ট এখানে করা যায়।  যারা ব্যবসা করেন তারা এখানে নিজের প্রতিষ্ঠানের নামে কিংবা নিজের নামে কারেন্ট একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন । বলতে গেলে আপনি বাংলাদেশের অন্য কোন ব্যাংকে এতগুলো অপশন পাবেন না যেগুলো আপনি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটে পাবেন ।

একাউন্ট তৈরি করতে আপনাদের কি কি প্রয়োজন হবে? 

এটা নির্ভর করে আপনি কি ধরনের একাউন্ট করবেন তার উপর । আমি কিছু একাউন্ট এর টাইপ এবং কি কি ডকুমেন্ট লাগবে তার একটা লিস্ট দিচ্ছি ।

সেভিংস একাউন্ট: যে ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট করবেন তার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি ও দুই কপি ছবি। নমমুনির এনআইডি কার্ডের ফটোকপি ও এক কপি ছবি। পরিবারের একটি বিদ্যুৎ বিলের কাগজ এবং ইনকামের একটি ডকুমেন্ট । ইনকামের ডকুমেন্ট পরিবারে যে কারো একজনের দিলেই হবে ।

কারেন্ট একাউন্ট: সেভিংস অ্যাকাউন্ট করতে যেগুলো প্রয়োজন সেগুলো প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হবে। ইনকামের ডকুমেন্টস আপনার ট্রেড লাইসেন্স দেই হয়ে যাবে । আপনি যদি আপনার কোম্পানির নামে একাউন্ট তৈরি করতে চান তাহলে আপনার কোম্পানির একটি সিল প্রয়োজন হবে ।

সঞ্চয় একাউন্ট: ডিপিএস, হ্জ, মহরানা, বিবাহ সঞ্চয় সহ সকল সঞ্চয় একাউন্টের জন্য যে ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হবে তা মোটামুটি এক। এ ক্ষেত্রে শুধু যে ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট করবে তার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি ও দুই কপি ছবি । নমনির এনআইডি কার্ডের ফটোকপি ও এক কপি ছবি হলেই চলবে ।

স্টুডেন্ট একাউন্ট: স্টুডেন্ট একাউন্ট করার জন্য দুইটা ধাপ রয়েছে । যদি স্টুডেন্টের বয়স ১৮ বছরের উপরে হয় তাহলে সে নিজে একাউন্ট পরিচালনা করতে পারবে । যদি স্টুডেন্টের বয়স ১৮ বছরের নিচে হয় তাহলে তার নামে তার পরিবারের যে কোন একজনে একাউন্ট পরিচালনা করবে। যদি স্টুডেন্টের বয়স ১৮ বছরের উপরে হয় তাহলে তার Nid এর ফটোকপি ও দুই কপি ছবি লাগবে। নমনির এন আইডি কার্ডের ফটোকপি ও এক কপি ছবি এবং স্টুডেন্ট আইডি কার্ড লাগবে । স্টুডেন্ট আইডি কার্ডের জায়গায় সে যে স্টুডেন্ট তার যে কোন একটা প্রুফ দিলেই চলবে । যদি স্টুডেন্ট এর বয়স ১৮ নিচে হয় তাহলে এগুলোর পাশাপাশি তার একজন অভিভাবক যে একাউন্ট পরিচালনা করবে। তার এন আইডি কার্ডের ফটোকপি ও দুই কপি ছবি প্রয়োজন হবে। 

সবগুলো একাউন্ট তৈরি করার জন্য একটি সচল মোবাইল নাম্বার প্রয়োজন হবে । যে ব্যক্তি একাউন্ট তৈরি করবে সেই ব্যক্তির এন আইডি কার্ড দিয়ে রেজিস্ট্রেশনকৃত মোবাইল নাম্বার প্রয়োজন হবে ।

কোন একাউন্টে কত টাকা চার্জ কাটে। 

স্টুডেন্ট একাউন্টে কোন চার্জ কাটেনা। সেভিংস একাউন্টে বছরে দুইবার এসএমএস চার্জ কাটে এবং অ্যাকাউন্ট চার্জ কাটে। এসএমএস চার্জ সাধারণত ৮৬ টাকা হয় এবং একাউন্টের চার্জ নির্ভর করে একাউন্টের ব্যবহারের উপর। এটা সাধারণত ১৫০ থেকে ২৭০ এর মধ্যে হয়ে থাকে। 

স্টুডেন্ট ও সেভিং একাউন্টে আপনি যদি দীর্ঘ সময় টাকাগুলো করে রাখেন তাহলে আপনি এখান থেকে সামান্য কমিশন পাবেন। কারেন্ট একাউন্টে টাকা হোল্ড থাকলেও কোন কমিশন পাওয়া যায় না। আপনি যদি অতিরিক্ত কিছু ব্যবহার করেন যেমন কার্ড, চেক সেগুলোর জন্য নির্ধারিত চার্জ কাটবে। সেগুলো ডিপেন্ড করে আপনি কি ধরনের সার্ভিস নিচ্ছেন তার উপর। ইসলামী ব্যাংকের সাধারণত অনলাইন ব্যাংকিং এর জন্য কোন চার্জ কাটেনা। 

Excise Duty কত টাকা কাটে।

এটা সাধারণত সকল ব্যাংকের সমান সংখ্যক হয়ে থাকে। নির্ভর করে আপনার একাউন্টে সর্বোচ্চ কত টাকা জমা হলো তার ওপর । যদি আপনার একাউন্ট ব্যালেন্স কখনোই এক লাখ টাকার উপরে না যায় তাহলে কোন অ্যাক্সেস ডিউটি কাটবেনা। এক লক্ষ থেকে 5 লক্ষ পর্যন্ত ১৫০ টাকা ৫ লক্ষ এর উপরে 10 লক্ষের নিচে হলে ৫০০ টাকা। বছরে একবারের জন্য হলেও যদি আপনার একাউন্টের ব্যালেন্স ১০ লাখ টাকার উপরে যায় তাহলে তিন হাজার টাকা এক্সেস ডিউটি কাটবে এবং এক কোটি নিচ পর্যন্ত এই পরিমাণ থাকবে। আপনার একাউন্টের ব্যালেন্স এক কোটি টাকার উপরে গেলে ১০০০০ টাকা কাটবে। এটা সাধারণত বছরে একবার কাটা হয় ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে।

ইসলামি ব্যাংক কত টাকা লাভ দেয়: ইসলামি ব্যাংক নির্দিষ্ট হারে লাভ দেয় না। কারন তাদের নিয়ম এ সুদ হারাম। আর যদি চক্তি করে লাভ দেয় তাহলে তা হারাম হবে। ইসলামি ব্যাংক এর মত অনুসারে তারা বলে যে তাদের লাভ এর উপর নির্ভর করে তারা ব্যাবহার কারিদের লাভ দেয়। তবে সাধারনত বছরে 7-10% লাভ দিয়ে থাকে। একাউন্ট এর ধরন এর উপর নির্ভর করে লাভ। 

ইসলামি ব্যাংক এর লিমিট কত: ইসলামি ব্যাংক এর সেভিংস একাউন্ট থেকে প্রতিদিন ৩ লক্ষ টাকা তোলা যায়। কারেন্ট একাউন্ট থেকে প্রতিদিন ৫ লক্ষ টাকা উওলোন করা যায়। ডিপিএজ থেকে বা ফিকস্ট ডিপোজিট থেকে সম্পূর্ন টাকাই তোলা য়ায়।

আশা করি এই পোষ্ট এ আপনি ইসলামি ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারছেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

Next Post Previous Post